বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬

ফেলুদা

তখন বছর-বছর পুজোসংখ্যা দেশে বেরোত ফেলুদা আর আনন্দমেলায় প্রফেসর শঙ্কু। সে সময়ে এখনকার মতন গরম থাকতে থাকতে পুজোসংখ্যা বেরিয়ে যেত না। বেরোত মহালয়ার আশেপাশে সময়ে। একবছর হা-পিত্যেশ করে থাকার পরে যখন দেশ বাড়িতে এল, দেখি ভো কাট্টা। নো ফেলুদা। কোন সাল সেটা? ৮০? ৮২? সেবার ফেলুদা বেরোল সন্দেশ পুজোসংখ্যায়। হত্যাপুরী। শুরুটাও অন্য ফেলুদার থেকে আলাদা। "ডংলুর কথা" দিয়ে। তারপর থেকে সেটাই রেওয়াজ হয়ে গেল। একবার দেশ পুজোসংখ্যায় ফেলুদা, আরেকবার সন্দেশে।

এর আগে সন্দেশে ফেলুদার দারুণ সব গল্প বেরিয়েছে। প্রথম ফেলুদা "ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি"-ই তো সন্দেশে। "ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা", "গোঁসাইপুর সরগরম", "সমাদ্দারের চাবি" - এ সবই সন্দেশে। তবে পুজোসংখ্যায় নয় বোধহয়। প্রোফেসর শঙ্কুও সন্দেশে শুরু। "একশৃঙ্গ অভিযান" মনে আছে সন্দেশে ধারাবাহিক বেরিয়েছিল। আমি পরে বাড়ির বাঁধান সন্দেশে পড়ি।

আজ হঠাৎ ইউটিউবে "গোঁসাইপুর সরগরম" দেখে মনে পড়ল এইসব। ফেলুদার গল্পে ডিটেকশন তো খুব স্ট্রং থাকত না। তাও সন্দেশের ওই "ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা", "গোঁসাইপুর সরগরম", "সমাদ্দারের চাবি" ইত্যাদিগুলোতেই যা একটু ডিটেকশন পাওয়া যেত। আর এগুলোর পটভূমিকাও মফস্বলি বাংলা বা গ্রাম বাংলা। সত্যজিৎ দু-চার কথায় সেটারও মাহোল যেরকম তৈরি করতেন, আমার খুব ভাল লাগত। একবার লিখেছিলেন, "কলকাতার বাইরে এলেই কীরকম ঝপ করে সন্ধ্যে নেবে যায়!" বা "কলকাতা থেকে বেরলেই সবুজ দেখে চোখের আরাম হয়।" - অবশ্যই প্যারাফ্রেজ করে লিখলাম। বাকি সবও স্মৃতি থেকে আন্দাজিফিকেশন।

এখন আর ফেলুদা পড়তে ভাল লাগে না। কিন্তু ফেলুদা পড়ার ছেলেবেলার স্মৃতি ভাবতে এখনও ভাল লাগে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন